কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট
প্রিয় পাঠক আপনি কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট কি এই বিষয়ে নিয়ে
সমস্যায় আছেন তবে সমস্যা নাই আজকে আমরা কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম
ট্যাবলেট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করবো চলুন তবে দেরি না ঝটপট জেনে নেওয়া
যাক
আমাদের দেশে এখন দেখা যাচ্ছে কোমরের ব্যথা নিয়ে অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন মানুষ
কোমরের ব্যথা হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে তাই আজকের আর্টিকেলটিতে আপনাকে পরিষ্কার
ভাবে বিস্তারিত সকল তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে
কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট
প্রিয় পাঠক আপনার যদি কোমরের ব্যথা বা কোনো রকম সমস্যা থাকে তাহলে আর্টিকেলটিকে
আপনার জন্য মেরুদণ্ডের ব্যথার জন্য ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সহায়ক হতে পারে, তবে
শুধুমাত্র যদি ব্যথা ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে হয়। ক্যালসিয়াম হাড়ের একটি
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং এটি শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্যকর হাড় বজায় রাখার জন্য
প্রয়োজনীয়। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম না পেলে, হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং ভেঙে
যেতে পারে, যার ফলে ব্যথা হতে পারে। কম্বরের ব্যথার অন্যান্য কারণও রয়েছে, যেমন
- পেশী টান
- আর্থারাইটিস
- ডিস্ক বেরিয়ে আসা
- স্পাইনাল স্টেনোসিস
- ফাইব্রোমায়ালজিয়া
- অস্টিওপরোসিস
যদি আপনার কোমর ব্যথা হয় তবে ব্যথার কারণ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তারের সাথে দেখা
করা গুরুত্বপূর্ণ। একবার কারণ নির্ণয় হয়ে গেলে, ডাক্তার উপযুক্ত চিকিত্সার
সুপারিশ করতে পারেন।
যদি আপনার কোমর ব্যথার কারণ ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হয়, তাহলে আপনার ডাক্তার
ক্যালসিয়ামের পরিপূরক নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারে। ক্যালসিয়ামের পরিপূরক বিভিন্ন
রূপে পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে ট্যাবলেট, ক্যাপসুল এবং চিবানোযোগ্য। সবচেয়ে
সাধারণ ধরনের ক্যালসিয়ামের পরিপূরক হল ক্যালসিয়াম কার্বনেট। অন্যান্য ধরনের
ক্যালসিয়ামের পরিপূরকের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম সাইট্রেট, ক্যালসিয়াম
ল্যাকটেট এবং ক্যালসিয়াম গ্লুকোনেট।
ক্যালসিয়ামের পরিপূরক গ্রহণ করার সময়, নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা
গুরুত্বপূর্ণ
- ক্যালসিয়ামের পরিপূরকগুলি সেরাভাবে খাবারের সাথে নেওয়া হয়।
- ক্যালসিয়ামের পরিপূরকগুলি অন্যান্য ওষুধের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, তাই আপনার কোনও ওষুধ গ্রহণ করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।
- খুব বেশি ক্যালসিয়াম গ্রহণের ফলে কিডনি স্টোন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
আপনার যদি কোমর ব্যথা হয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন যে ব্যথার কারণ
নির্ণয় করতে এবং আপনার জন্য সঠিক চিকিত্সার সুপারিশ করতে পারে।
কোমরের ক্যালসিয়াম কমে গেলে কি খেতে হবে
কোমরের ক্যালসিয়াম কমে গেলে নিম্নলিখিত খাবারগুলো খাওয়া যেতে পারে দুগ্ধজাত
খাবার
- দুধ: ১ কাপ দুধে প্রায় ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- দই: ১ কাপ দইতে প্রায় ৪৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- পনির: ১ টুকরো পনিরে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
সবুজ শাকসবজি
- ব্রকলি: ১ কাপ ব্রকলিতে প্রায় ৮৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- কলা: ১ কাপ কলাতে প্রায় ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- পালং শাক: ১ কাপ পালং শাকের 245 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- লাউ শাক: ১ কাপ লাউ শাকের 180 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
অন্যান্য খাবার
- মাছের নরম কাঁটা: ১ কাপ মাছের নরম কাঁটাতে প্রায় ৩৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- সয়াবিন: ১ কাপ সয়াবিনে ১০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- বাদাম: ১ কাপ বাদামে ৮০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- শিম: ১ কাপ শিমে ৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- ক্যালসিয়াম শোষণ বৃদ্ধির জন্য
- ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, যেমন: ডিম, মাশরুম, স্যামন মাছ।
- রোদে কিছুক্ষণ সময় কাটানো।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা।
কোমরের ক্যালসিয়াম কমে গেলে কি খেতে হবে কিছু টিপস
- দিনে অন্তত ১০০০-১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা উচিত।
- ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার একসাথে না খেয়ে সারা দিন ভাগ করে খাওয়া।
- ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দেয় এমন খাবার, যেমন: ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, ফাইটেট সমৃদ্ধ খাবার (যেমন: ডাল, বাদাম) এড়িয়ে চলা।
কোমরের ক্যালসিয়াম কমে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার আপনার বয়স,
লিঙ্গ, ওজন, জীবনধারা, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা বিবেচনা করে আপনার জন্য
উপযুক্ত ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ও সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করতে
পারবেন।
কোমর ব্যথার জন্য কি ট্যাবলেট খাওয়া যায়
হ্যাঁ, কোমর ব্যথার জন্য ট্যাবলেট খাওয়া যায়। তবে, ট্যাবলেট খাওয়ার আগে অবশ্যই
একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।কোমর ব্যথার জন্য ডাক্তার সাধারণত
নিম্নলিখিত ট্যাবলেটগুলির মধ্যে একটি বা একাধিক লিখে দেন
- ব্যথানাশক
- প্যারাসিটামল
- আইবুপ্রোফেন
- ন্যাপ্রোক্সেন
- ডাইক্লোফেন্যাক
- মাংসপেশি শিথিলকারী
- থাইওকলকোসাইড
- অরফেনাড্রিন
- সাইক্লোবেনজাপ্রাইন
- নার্ভ ব্লক:
- গ্যাবাপেন্টিন
- প্রিগাব্যালিন
- স্টেরয়েড
- প্রেডনিসোলন
- ডেক্সামেথাসোন
কোমর ব্যথার জন্য ট্যাবলেট খাওয়ার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ট্যাবলেট খান।
- ট্যাবলেটের নির্ধারিত ডোজ ও সময়সূচী মেনে চলুন।
- ট্যাবলেট দীর্ঘ সময় ধরে খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
- ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
কোমর ব্যথার জন্য ট্যাবলেট ছাড়াও অন্যান্য চিকিৎসাও রয়েছে।এই চিকিৎসাগুলির
মধ্যে রয়েছে
- ফিজিওথেরাপি
- ব্যায়াম
- ম্যাসেজ
- টেনস
- অ্যাকুপাংচার
- আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা
কোমর ব্যথার জন্য কোন চিকিৎসাটি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে তা নির্ধারণ করার
জন্য একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
কোমর ব্যথার কমানোর মলম
প্রিয় পাঠক বাজারে নানান ধরনের ব্যাথা কমানোর মলম পাওয়া যায় তবে আমারা আপনাকে পরামর্শ দিব যে কোনো ডাক্তার থেকে মলম কিনে নিবেন ব্যথা কমানোর জন্য বাজারে অনেক ধরনের মলম পাওয়া যায়। এগুলির মধ্যে কয়েকটি সবচেয়ে সাধারণ হল
- ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস (NSAIDs), যেমন আইবুপ্রোফেন এবং ন্যাপ্রোক্সেন। NSAIDs ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। . ব্যথার ঔষধ]
- কাউন্টার-ইরিট্যান্টস, যেমন ক্যাপসাইসিন এবং মেন্থল। কাউন্টার-ইরিট্যান্টগুলি ত্বককে উত্তেজিত করে, যা ব্যথার সংকেতগুলিকে ব্লক করতে সাহায্য করে। ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- স্নায়ুবিক , যেমন লিডোকেন এবং প্রিলোকেন। স্থানীয় অ্যানেস্থেটিকগুলি ব্যথার এলাকাকে অবশ করে দেয়।
- কোমর ব্যথার জন্য মলম বেছে নেওয়ার সময়, ব্যথার তীব্রতা, ব্যথার কারণ এবং ব্যক্তির অন্যান্য চিকিৎসা অবস্থা বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যথার জন্য মলম ব্যবহারের আগে একজন ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টের সাথে কথা বলাও গুরুত্বপূর্ণ।
কোমর ব্যথার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট মলমের মধ্যে রয়েছে
- আইবুপ্রোফেন মলম (আদভিল, মোট্রিন আইবি) একটি NSAID যা ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি প্রাপ্তবয়স্ক এবং 2 বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত। ন্যাপ্রোক্সেন মলম (Aleve) হল একটি NSAID যা ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি প্রাপ্তবয়স্ক এবং 12 বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত।
- ক্যাপসাইসিন মলম (Zostrix) একটি কাউন্টার-ইরিট্যান্ট যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এটি প্রাপ্তবয়স্কদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত। লিডোকেন মলম (Xylocaine) একটি স্থানীয় অ্যানেস্থেটিক যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এটি প্রাপ্তবয়স্ক এবং 2 বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত।
কোমর ব্যথার চিকিৎসায় মলম ব্যবহার করা যেতে পারে অন্যান্য চিকিৎসার সাথে, যেমন
ব্যায়াম, ফিজিওথেরাপি এবং ওষুধ। কোমর ব্যথার জন্য সেরা চিকিৎসা বিকল্পগুলি
নিয়ে আলোচনা করার জন্য একজন ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টের সাথে কথা বলা
গুরুত্বপূর্ণ।
কোমর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
কোমর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় কোমর ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে
হতে পারে। এটি দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, ভারী জিনিস তোলা, ব্যায়ামের অভাব, বা আঘাতের
কারণে হতে পারে। কোমর ব্যথা কমাতে অনেক ঘরোয়া উপায় আছে।
কিছু কার্যকর ঘরোয়া উপায়
- সেঁক দেওয়া: কোথাও ব্যথা হলে প্রাথমিকভাবে সেঁক দিলে অনেকটা ভালো ফল পাওয়া যায়।
- গরম সেঁক: গরম সেঁক পেশীগুলিকে শিথিল করে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- ঠান্ডা সেঁক: ঠান্ডা সেঁক প্রদাহ এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
- আদা: আদা কোমরের ব্যথায় দারুণ কার্যকর।
- আদা চা: আদা চা তৈরি করে পান করতে পারেন।
- আদা বাটা: আদা বাটা করে ব্যথার জায়গায় সেঁক দিতে পারেন।
- হলুদ: হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ আছে যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- হলুদ দুধ: হলুদ দুধ তৈরি করে পান করতে পারেন।
- হলুদ বাটা: হলুদ বাটা করে ব্যথার জায়গায় সেঁক দিতে পারেন।
- মেথি বীজ: মেথি বীজে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ আছে যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- মেথি বীজের পানি: মেথি বীজ ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করতে পারেন।
- মেথি বীজের প্রলেপ: মেথি বীজের প্রলেপ তৈরি করে ব্যথার জায়গায় লাগাতে পারেন।
- লেবুর শরবত: লেবুর শরবতে ভিটামিন সি থাকে যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- ম্যাসাজ: নিয়মিত ম্যাসাজ কোমরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম কোমরের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন কোমরের উপর চাপ সৃষ্টি করে ব্যথা বাড়াতে পারে।
শেষ কথা-কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট
কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এবং কোমরের ক্যালসিয়াম কমে গেলে কি
খেতে হবে এছাড়া কোমর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য এই আর্টিকেলটিতে আপনি পরিষ্কারভাবে জানতে পেরেছেন প্রিয় পাঠক আশা
করছি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হতে পেরেছেন যদি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি
উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটিকে শেয়ার দিয়ে অন্যকে সঠিক তথ্য জানার সুযোগ
করে দিন এবং সেই সাথে আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকে
এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url