মরিচের ফলন বৃদ্ধির উপায়
প্রিয় পাঠক মরিচের ফলন বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানার জন্য হয়তো নানান জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন তারপরও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না তো সমস্যা নাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনার সমস্ত প্রশ্নে সঠিক উত্তর দিব এবং সেই সাথে মরিচ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আপনার যদি মরিচ চাষ সম্পর্কে সঠিক ধারণা বা জানা থাকে তাহলে আপনি মরিচ চাষ করে অনেক লাভবান হতে পারবেন মরিচ চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে গুরুত্বপূর্ণ নিচের আলোচনা গুলো পড়ে ফেলুন।
ভূমিকা
শুধু আমাদের দেশে নয় গোটা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফসল হচ্ছে মরিচ। মরিচ আমাদের দেশের সাধারণত রান্নার মসলা হিসেবে পরিচিত এছাড়াও নানান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে এই মরিচ মরিচ আমাদের দৈনন্দিন রান্না রং রুচি এবং রান্নার স্বাদ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এছাড়াও মরিচ আমাদের দেশে বেশ চাহিদা রয়েছে , তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক মরিচ চাষ ও ফলন বাড়ানোর উপায় ।
মরিচের ফলন বৃদ্ধির উপায়
এখন আমাদের দেশে প্রায় সারা বছরই মরিচ চাষাবাদ হয়ে থাকে তবে চরাঞ্চলে মরিচ চাষের উৎপাদনে বেশি হয় বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় মরিচ মরিচ প্রধান কৃষি ফসল হিসেবে পরিচিত আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন জাতের মরিচ চাষ হয়ে থাকে বারি মরিচ ১ বারি মরিচ ২ বারি মরিচ ৩ ইত্যাদি মরিচের ফলন বৃদ্ধি করার জন্য
মরিচ গাছের সারিবদ্ধ ভাবে বীজ রোপন করতে হবে এবং মরিচ গাছের নিয়মিত পরিচর্যা এবং যত্ন নিতে হবে এছাড়াও খবরের কাগজ অথবা পলিথিন ছোট ছোট টুকরো করে মরিচের গাছের গোড়ায় মাটির সাথে মিলিয়ে দিলে মরিচের উৎপাদন হবে ভালো হবে এবং মরিচ চাষ করার জন্য সঠিকভাবে জমি নির্বাচন এবং বীজতলা তৈরি করতে হবে মরিচ চাষের জলবায়ু এবং
আরো পড়ুনঃমাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
সময়ের দিকে খেয়াল রেখে বীজ রোপন করতে হবে মরিচ চাষের পূর্বে মরিচের পরিপুষ্ট চারা ও বীজ সংগ্রহ করতে হবে মরিচ চাষের জন্য উপযুক্ত জমি তৈরি করতে হবে মরিচ চাষের জন্য জমিতে পরিমাণ মতো স্যার প্রয়োগ করতে হবে সঠিক নিয়মে মরিচের চারা বীজ রোপন করতে হবে মরিচ গাছের রোগ বালাই দমনের ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে হবে মরিচ গাছে যেনো পোকামাকড় না লাগে সেইদিকে খেয়াল রাখতে হবে সঠিক সময়ে কীটনাশক বিষ প্রয়োগ করতে হবে
মরিচ গাছে ফুল না ধরার কারণ
মরিচ গাছে ফুল আসার জন্য লিটোসিন প্রয়োগ করতে হবে এটি অনেক কার্যকরী প্রয়োগ করার ফলে নাচে ফুল এবং মরিচ ভালো ফলন হবে একটি মরিচ গাছের প্রতি 100 মিলি পানিতে তিন থেকে চার ফোটা লিটোসিন স্প্রে করুন স্প্রে করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন স্প্রের পানি নিচে পড়ে না যায় এই ওষুধটি রোদে থাকা অবস্থায় গাছের উপর স্প্রে করুন এটি একটি কীটনাশক এবং প্রয়োগ করার সময় নিজের সর্তকতা অবলম্বন করে চলুন এটি একটি বিষ
মরিচ গাছের পোকা দমন
মরিচ গাছের পোকামাকড় দমন করার জন্য নানান ধরনের বাজারে কীটনাশক পাওয়া যায় এর মধ্যে থেকে ডাইমেথয়েট জাতীয় কীটনাশক অথবা রগর বা টাফগর ২০ মিলি আর না হলে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক এডমায়ার টিডো ১০ মিলি লিটার ১০ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করুন একদিন পরপর দুই থেকে তিনবার স্প্রে করুন
কীটনাশক স্প্রে করার সময় নিজের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং নিয়মিত জমি পরিদর্শন করার পাশাপাশি জমিতে কীটনাশকের কাজ হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এছাড়াও মরিচ গাছের নানান ধরনের রোগ বিভিন্ন সময় দেখা যায় এটি আবহাওয়া জলবায়ুর সময় নানান ধরনের রোগের আবির্ভাব ঘটে তবে এসব রোগ থেকে মরিচ গাছকে বাঁচানোর জন্য কৃষিবিদের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে মরিচ চাষ করলে মরিচ গাছ এবং মরিচ ফল উৎপাদন বৃদ্ধি ফলন পাবেন
মরিচ গাছের কীটনাশক
মরিচের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি এছাড়াও নানান পুষ্টি উপাদান মরিচের মধ্যে রয়েছে এবং দিন দিন মরিচের চাহিদা বেড়ে চলেছে মরিচ চাষ পদ্ধতি জানা থাকলে অনেক সহজে মরিচ চাষ করে লাভবান হওয়া যায় মরিচ চাষ করতে গেলে মরিচ গাছের রোগ এবং রোগ দমন বিষয়ে জানতে হবে মরিচ গাছে নানান ধরনের রোগ দেখা যায় যেমন
ব্যাকটেরিয়াজনিত ফলপ্রচা রোগ এই রোগটি সাধারণত গরম ও আদ্র আবহাওয়া বৃষ্টির ছটা পোকা ও উদ্ভিদের রোগাক্রান্ত অংশের মাধ্যমে ছড়ায় এ রোগের বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায় যেমন ফল কে দেখতে পানিতে ভর্তি ফলের মতো দেখা যায় ফলের ত্বক ফেটে পানির ফলের ভেতর হতে বের হয়ে গেলে ফল শুকিয়ে যায় মরিচের ভেতরে অংশ খুব নরম মনে হয় এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সুস্থ ও রোগ মুক্ত গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে আক্রান্ত লতা পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে এক লিটার পানির মধ্যে সানভিট কপার অপটিক্লোরাইড ৫ গ্রাম মিশিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পর পর গাছে স্প্রে করুন তাহলে এ রোগ অনেকটা কমে যাবে
আরো পড়ুনঃআঙ্গুর ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
পাতা কোকড়ানো রোগ মরিচ গাছের পাতা কুঁকড়ানো একটি পরিচিত রোগ এবং সরাচর এটি দেখা যায় এ রোগের বিস্তার বাহক পোকা সাদামাছি ক্ষতিকর পোকা ইত্যাদি মাধ্যমে ছড়ায় এ রোগের লক্ষণগুলো বলতে গেলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় পাতাগুলো ছোট গুচ্ছাকৃতির হয়ে যায় এবং আক্রান্ত গাছের পাতাগুলো কুঁকড়ে যায় এবং স্বাভাবিক বা তার তুলনায় এটি পরু হয় এবং গাছের অতিরিক্ত ডালপালা ঝপের মত হয়ে যায় ফল ধারণ ক্ষমতা কমে যায় ইত্যাদি এবং এ রোগের প্রতিকার হিসেবে সুস্থ গাছ থেকে পরবর্তী মৌসুমের বীজ সংগ্রহ করুন রোগাকান্ত চারা কোন অবস্থাতে লাগানো যাবে না তারা অবস্থা মেলাথিয়াম জাতীয় কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে বাহক পোকা দমনের জন্য গাছের উপর স্প্রে করুন
চুনিয়াফোড়া পাতা পচা রোগ অল্টারনারিয়া ফল পচা রোগ আগা মরা ক্ষত ফল পচা রোগ ঢলে পড়া বা গোড়া ও পচে যাওয়া রোগ
মরিচ চাষ পদ্ধতি
মরিচ গাছ সারি বদ্ধ ভাবে লাগাতে হবে এবং একটি চারা থেকে অন্য চারাটির দূরত্ব কমপক্ষে ১২ থেকে ১৬ ইঞ্চি থাকতে হবে এবং মরিচ চাষ পূর্বে অবশ্যই বীজতলা সঠিকভাবে তৈরি করতে হবে এবং মরিচের বীজ তোলা তৈরি বীজ নির্বাচন সার প্রয়োগ মরিচের চারা তৈরি ও সঠিক গর্ত করে চারা রোপণ করতে ইত্যাদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে হবে তাহলে মরিচ গাছের সঠিক ফলন পাওয়া যাবে
এবং মরিচ চাষ পূর্বে অবশ্যই বীজতলা সঠিকভাবে তৈরি করতে হবে এবং মরিচের বীজ তোলা তৈরি বীজ নির্বাচন সার প্রয়োগ মরিচের চারা তৈরি ও সঠিক গর্ত করে চারা রোপণ করতে ইত্যাদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে হবে তাহলে মরিচ গাছের সঠিক ফলন পাওয়া যাবে মরিচের বীজ বপন করার পূর্বে ১২ ঘন্টা পানিতে বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে বীজ
বপনের উপযুক্ত সময় যেমন এপ্রিল মাস এবং রবি মৌসুমের জন্য অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস বীজ বপন করতে হবে, মরিচ চারা তৈরি ও রোপণ করার জন্য জমিতে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং তিন চারটে চার্জ দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে এবং মরিচ গাছ লাগানোর জন্য শাড়ির দূরত্ব সাইট থেকে ৭০ সেন্টিমিটার হতে হবে এবং মরিচ গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময় বিকাল লাগানোর পর ৩ থেকে ৪ নিয়মিত প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা পানি দিতে হবে
মরিচ গাছে সার দেওয়ার নিয়ম
মরিচ চাষ আর প্রয়োগের সময়কে দুই ভাগে ভাগ করা যায় একটি চারা লাগানোর পূর্বের সময় এবং অন্যটি চারা লাগানোর পর দুটো সময়ে সার প্রয়োগ করা অত্যন্ত প্রয়োজন মরিচের চারা লাগানোর বীজ থেকে ২৫ দিন পূর্বে গোবর সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে এবং জমিতে প্রতি হেক্টর গোবর ১০ টন ইউরিয়া ২৫০কেজি টিএসপি ২০০ কেজি এবং এমওপি আর 150 কেজি প্রয়োগ করতে হবে
এবং মরিচ গাছ রোপন করার জমি তৈরি করার সময় টিএসপি গোবর সার এবং এমওপি স্যার 50 কেজি করে প্রয়োগ করতে হবে এবং চারা রোপনের পর ২৫ দিন পর ৮৫ কেজি ইউরিয়া ৩৫ কেজি এমওপি প্রথম ঊপরি প্রয়োগ করতে হবে এবং চারা লাগানোর ৫০ দিন পর দ্বিতীয় ৭০ দিন পর তৃতীয় বার সার প্রয়োগ করতে হবে
মরিচ চারা রোপন পদ্ধতি
মরিচের চারা জমিতে রোপন করার আগে জমিতে সামান্য পরিমাণে গর্ত করতে হবে সেই গর্তে এমন ভাবে মরিচের চারা রোপন করতে হবে যাতে মরিচ গাছ চারা সোজা থাকে এবং গোড়া কোন ক্ষতি না হয়। তাছাড়াও মুরিদ গাছ সোজা রাখার জন্য প্রয়োজনে মরিচ গাছের গোড়ায় একটি করে লাঠি বা বেঁধে দিন এবং মরিচ গাছগুলো অবশ্যই সারিবদ্ধ ভাবে রোপন করতে হবে এবং জমিতে চারা রোপন হওয়ার পর পরিমান মত বিভিন্ন জৈব এবং রাসায়নিক সার পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োগ করতে হবে
মরিচ গাছের পরিচর্যা পদ্ধতি
মরিচ ভালো ফলন পাওয়ার জন্য সঠিক সময় এবং সব সময় মরিচ গাছের পরিচর্যা বা যত্ন নিতে হবে নিয়ম করে মরিচ গাছের গোড়ার আগাছাগুলো পরিষ্কার করতে হবে মরিচের চারা রোপনের ওপর সময়ে খেয়াল রাখতে হবে যেন জমিতে কোনরকম পানি জমে না থাকে এবং জমিতে পানি জমে থাকলে তা দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সার বিষ কীটনাশক প্রয়োগ জমিতে সেচ দেওয়া মরিচ গাছের রোগ বালাই দমনের ব্যাবস্থা ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
শেষ কথা
আশা করি সমস্ত আলোচনা পরে মরিচ গাছের চাষ পদ্ধতি এবং ভালো ফলন পাবার উপায় জেনে গেছি এই আর্টিকেল পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত সবাই কে আটিকেল পড়ার আমন্ত্রণ জানাবেন এই ব্লগ কে ফলো এবং শেয়ার দিবেন এবং কোন ভুল থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url