শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি জেনে নিন
প্রিয় পাঠক শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্য হয়তো নানান জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন তারপরও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না তো সমস্যা নাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনার সমস্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিব এবং সেই সাথে পেঁয়াজ গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
পেঁয়াজ আমাদের দেশের একটি মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয় আমাদের দেশে এটি বেশ চাহিদা রয়েছে পেঁয়াজ চাষ সম্পর্কে আপনার বিস্তারিত জানা থাকলে আপনি সহজে একজন সফল চাষি হতে পারবেন তাই দেরি না করে চলুন জেনে আসি পেঁয়াজ চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত
ভূমিকা
আমাদের দেশের চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদন তুলনামূলক অনেক কম তাই প্রতিবছর দেশের বাহির থেকে নানান জাতের পেঁয়াজ আমদানি করা হয় পেয়াজ সাধারণত শীতকাল উৎপাদিত হয় তবে এখন গ্রীষ্মকালীন সময়েও কিছু জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন করা সম্ভব এই উৎপাদনের ফলে কৃষক উচ্চমূল্য পাচ্ছে পাশাপাশি দেশের মসলার
আরো পড়ুনঃমরিচের ফলন বৃদ্ধির উপায়
এবং খাদ্যের চাহিদার যোগান হচ্ছে পেঁয়াজ চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে অবশ্যই পুরো আলোচনা গুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে আপনি একজন সফল কৃষক বা সফল চাষি হতে পারবেন গ্রীষ্মকালীন উৎপাদন পেঁয়াজ জাত পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য শীতকাল একটি উপযোগী মৌসুম হলে এখন দেশে গ্রীষ্মকালীন ও পেঁয়াজ চাষ হয়ে থাকে গ্রীষ্মকালীন সময়ে কয়েক জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়ে থাকে
গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
গ্রীষ্মকালীন সময়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলার গবেষণা কেন্দ্র হতে জানা যায় গ্রীষ্মকালীন সময়ে
- বারি পেঁয়াজ ২
- বারি পেঁয়াজ ৩
- বারি পেঁয়াজ ৫
- বিনা পেঁয়াজ১
- বিনা পেঁয়াজ ২
নামে পরিচিত এই পাঁচটি জাতের পেঁয়াজ গ্রীষ্মকালীন সময়ে চাষ হয়
শীতকালীন উৎপাদন পেঁয়াজ জাত
শীতকালীন মৌসুমে যেসব জাতের পেঁয়াজ চাষ উপযোগী সে পেঁয়াজগুলো জাতের নাম হলো
- বারি পেঁয়াজ ১
- বারি পেঁয়াজ ২
- বারি পেঁয়াজ ৩
- বারি পেঁয়াজ ৫
কোন মৌসুমে কোন জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন করলে বেশি ফলন পাওয়া যায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকলে আপনার জন্য পেঁয়াজ চাষ করে লাভবান হওয়া অতি দ্রুত সম্ভব
পেঁয়াজ বীজ রোপণ পদ্ধতি
- প্রথমে জমি তৈরি করে নিতে হবে
- পেঁয়াজের চারা রোপনের পূর্বে তিন থেকে চার সপ্তাহ পূর্বে হালকা গভীর ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার করে ৪ থেকে ৫টি চাষ দিতে হবে ভালোমতো মই দিতে হবে
- জমির আগাছা গুলো পরিষ্কার করে দিতে হবে
- এবং জমির মাটি গুলো ভেঙ্গে ঝুর ঝুরে করে নিতে হবে জমিতে ২৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে সারি করে নিতে হবে
- ৫থেকে ৬ সেন্টিমিটার গভীর নালা টানতে হবে ২০ সেন্টিমিটার দূরত্বে পেঁয়াজের চারা রোপণ করতে হবে
- এবং বিজবুকনের সময় অত্যাধিক রোজ বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পলিথিন অথবা চাটায় ব্যবহার করতে হবে
- অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে প্রচণ্ড রোধ এবং বৃষ্টি সময় বীজ তলা ঢেকে রাখতে হবে এমনি সময় বীজতলা উন্মুক্ত রাখতে হবে
পেঁয়াজ বীজ চাষ পদ্ধতি
জমির আগাছা পরিষ্কার করুন ভালোভাবে চাষ সময় দিয়ে বীজ তোলা এক সপ্তাহ রেখে দিন। পেঁয়াজ বীজ রোপনের পূর্বে সন্ধ্যায় জমি ভিজিয়ে রেখে পরের দিন পেঁয়াজ বীজ রোপন করুন। এছাড়াও জমি শুকানো থাকা অবস্থায় বীজ বপন করতে পারবেন বীজ বপনের পূর্বে সন্ধ্যায় পেঁয়াজের বীজ ভিজিয়ে রেখে দিন এবং পরের দিন এক ঘন্টার ও দেশ শুকিয়ে দেওয়ার পর বীজ রোপণ করতে হবে বীচ রোপনের পর ঝুরঝরে মাটি দিয়ে বীজ ঢেকে রাখতে হবে এবং বীজ বপনের পর বীজ বেডের জেনো ছায়া থাকে বা ব্যবস্তা করতে হবে
পেঁয়াজ গাছের পরিচর্যা
পেঁয়াজ গাছের সঠিকভাবে পরিচর্যা বা যত্ন নিতে পারলে অনেক বেশি ফলন পাওয়া যায় এবং লাভবান হওয়া সম্ভব তাই পেঁয়াজ গাছে যত্ন বা পরিচর্যা সঠিক সঠিক সময়ে সার পানি দেওয়া আগাছা পরিষ্কার ইত্যাদি জানতে হবে
- প্রথমে পেঁয়াজের বীজ সুস্থ চারা রোপনের ব্যবস্থা করুন
- রোপনের পূর্বে পেঁয়াজের বীজ সুস্থ এবং পরিপুস্ট নির্বাচন করে নিতে হবে
- এবং আক্রান্ত গাছ তুলে নিতে হবে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে
- এবং একই জমিতে বারবার পেঁয়াজ না করে পাশাপাশি অন্য সবজি চাষ করুণ
- জমিতে আগাছা সময়মতো পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং
- পাশাপাশি রোগ পোকামাকড় যেন গাছের কোন ক্ষতি করে না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং জমিতে পানি বা রসের অভাব থাকলে সেচ দিতে হবে
পেঁয়াজ সার দেওয়ার নিয়ম
পেঁয়া চাষের জন্য সঠিক পরিমাণে সার দেওয়া প্রয়োজন সঠিক পরিমাণে সার দিলে জমির উর্বরতা বেড়ে ফলন বেশি উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকে পেঁয়াজের জমি বা বীজতলা তৈরি করার সময় ১৫ কেজি ইউরিয়া ১০ কেজি এমওপি শুধু মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে এবং
পেঁয়াজের জমিতে বিঘা প্রতি ৩৩ শতাংশ গোবর ৩০ মন ইউরিয়া ৩৩ কেজি টিএসপি ২৫ কেজি এমওপি ২০ কেজি ১০ জিপসাম ১০ কেজি ২ কেজি ফুরাডান কার্বেন্ডাজিম ১ কেজি সুলবোরন ১ কেজি ১ কেজি চিলেটেড এবং সাথে জিংক সার প্রয়োগ করতে হবে এবং চারা রোপনের ২৫ থেকে ৪৫ পর ইউরিয়া ও এমওপি সার দুই ভাগে ভাগ করে উপরে প্রয়োগ করতে হবে
শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
পেঁয়াজের আমাদের দেশে অনেক চাহিদা রয়েছে এটি উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি এটি আমাদের দেশের চাহিদা মেটাতে পারে না যার ফলে বিদেশ থেকে নানান জাতের পেঁয়াজ আমদানি করা হয় পেঁয়াজ আমাদের দেশে মসলা হিসেবে রান্নায় ব্যবহৃত হয় অনেকে এটি সালাদ অথবা কাঁচা ও খেতে পারবে পেঁয়াজ বিভিন্ন জাতের এবং বিভিন্ন তাদের হয় যেমন ঝাঁজালো মিষ্টি এবং তিতা
এইজন্য এটি আপনার আশপাশে কোন ফাঁকা জায়গা থাকলে পদ্ধতি জানা থাকলে অল্প জায়গাতে পেঁয়াজ চাষ করে নিজের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারবেন এবং সঠিক পেঁয়াজ চাষের জন্য উপযুক্ত জমি ও মাটি তৈরি করতে হবে সঠিক জাতের পেঁয়াজ নির্বাচন করে নিতে হবে পরিপুষ্ট ও সুস্থ এবং ভালো বীজ রোপন করতে হবে জমিকে আগাছা মুক্ত রাখার চেষ্টা করুন সঠিক সময়ে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন রোগপোকা মাকড় থেকে গাছ বাঁচিয়ে রাখুন
বিঘা প্রতি পেঁয়াজের ফলন
পেঁয়াজের উৎপাদন জমির উর্বরতা এবং পরিচর্যার পূরণ নির্ভর করে আবহাওয়া জলবায়ু ইত্যাদি পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় পেঁয়াজের ফলন কম অথবা বেশি হয় পেঁয়াজ বিভিন্ন জাতের বিভিন্ন সময়ে উৎপাদনের ফলন বিঘা প্রতি নানান ধরনের হয়ে থাকে যেমন দেশি জাতের পেঁয়াজগুলো বিগা প্রতি প্রায় ৫০ থেকে ৬০ মন হয়ে থাকে
এবং ভারতীয় জাতের পেঁয়াজ যেমন সুখ সাগর ফলন বিঘা প্রতি প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে তাহেরপুরি জাতের পেঁয়াজের ফলন বিঘা প্রতি প্রায় ৫০ থেকে ৬০ মন হয়ে থাকে এটি পেঁয়াজের ফলন কমবেশি হয় পেঁয়াজ গাছের সঠিক সময় যত্ন নেওয়া এবং পরিচর্যা না নেওয়ার জন্য
বাজারে পেঁয়াজের মূল্য ২০২৪
আমাদের দেশে পেঁয়াজ চাহিদা মেটানোর জন্য পেঁয়াজ উৎপাদন অনেক কম এজন্য পেঁয়াজের দাম দিন দিন অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশের বাজারের অবস্থা সব সময় একরকম থাকে না। কোন এক সময়ে পেঁয়াজের দাম অনেকটা বেড়ে যায় এবং এর মূল কারণ হচ্ছে বাইরের দেশ থেকে পেঁয়াজের আমদানি হওয়া। এবং অনেক বিক্রেতা মালিকরা পেঁয়াজগুলোকে স্টোর করে রাখে
এখন দেশের বাজারে পরিস্থিতি অনুযায়ী পেঁয়াজ ১০ কেজ প্রায় ১০০ থেকে ১১০০ পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে অথবা ১১০০ থেকে ৯০০ টাকা বিক্রি হয় ২৫ কেজি পেয়াজের মূল্য এখন বাজারে প্রায় ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকা এবং ৫০ কেজি পেঁয়াজের মূল্য ৫০০০ থেকে ৫200 টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে আমাদের দেশে পাইকারি মূল্যে পেঁয়াজের মূল্য অনেকটা কম এই নামগুলো অনলাইন থেকে নেওয়া হয়েছে তবে সময় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী পেঁয়াজের দাম কম অথবা বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করছি সমস্ত আলোচনা পড়ে আপনার কাঙ্খিত উত্তর পেয়েছেন এবং জানতে পেরেছেন সঠিক সময়ে পেঁয়াজ চাষ করলে অথবা সঠিক নিয়মে গাছের পরিচর্যা ছাড় দেওয়া ইত্যাদি করলে অনেক বেশি ফলন উৎপাদন পাবেন উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজন সবাইকে এই বিষয়ে জানিয়ে পড়ার আমন্ত্রণ জানাবেন এবং ব্লগকে শেয়ার দিবেন ভুল ত্রুটি হলে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url