গর্ভকালীন সময়ে বিপদ লক্ষণ গুলো কি জেনে নিন
প্রিয় পাঠক গর্ভকালীন সময়ে বিপদ লক্ষণ গুলো কি জানার জন্য নানান জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন তারপরও সঠিক তথ্য জানতে পারছেন না তো সমস্যা নাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনার সমস্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিব এবং সেই সাথে গর্ভকালীন সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
গর্ভকালীন সময়ে মহিলাদের অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে তাদের হাটা চলার দৈনিক অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তাই আজকে তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক এবং সাস্থ্য সচেতন হয়ে নিজের জীবন যাপন করি ।
ভূমিকা
প্রত্যেকটি মহিলা মা হওয়ার মাধ্যমে মেয়ে হয়ে জন্মগ্রহণ করার সার্থকতা লাভ করে প্রত্যেকটি মেয়ে বা মহিলায় চায় যে তাদের সন্তান সুস্থ স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণ করুক এবং প্রতিটি মা চাই তার সন্তান সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠুক কিন্তু শরীরের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা এবং বিভিন্ন কারণে গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর বিপদের শিকার হতে হয় এবং নানান স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি মুখোমুখি হতে হয় তাই প্রত্যেকটি মায়েদের উচিত গর্ভ অবস্থায় সাস্থ্য সচেতন এবং গর্ভকালীন বিপদ লক্ষণ গুলো জেনে রাখা ,তাই আজকে আমরা বিপদ সংকেত গুলো বিস্তারিত আলোচনা করব
নবজাতকের বিপদ চিহ্ন
নবজাতকের বিপদ চিহ্ন গুলো বুঝতে পারা অনেক কঠিন একটি বিষয় এবং একটি সুস্থ বাচ্চা চিহ্ন না জানার ফলে খুব বেশি ক্ষতি হয় না কিন্তু বিপদ চিহ্ন যারা না থাকলে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে তাই আমাদের সবার জানা উচিত নবজাতকের বিপদ চিহ্ন গুলো নবজাতকের
প্রথম বিপদ চিহ্ন হচ্ছে মায়ের দুধ খেতে না পারা বা মায়ের দুধ টেনে খেতে না পারা যে বাচ্চা আগে মায়ের দুধ টেনে খেতে পারতো এবং সে হঠাৎ করে খেতে পারছে না তাহলে অতিসত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।এই সময় বাচ্চার দুধ টেনে খেতে না পারলে জোর করে ঢেলে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না এতে বাচ্চার শ্বাসনালীতে দুধ চলে যায় এবং বাচ্চার শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এতেই শিশুর ক্ষতি হতে পারে তাই এই কাজ থেকে বিরত থাকুন।
নবজাতকের আরেকটি বিপদ চিহ্ন হলো বাচ্চা গা বা শরীর অতিরিক্ত হলুদ হয়ে যাওয়া একটি বাচ্চার দুই সপ্তাহের মধ্য গায়ের রং মাথা থেকে শুরু করে নাভি পর্যন্ত হলুদ হয়ে গেলে নিকটস্থ কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা ডাক্তারের পরামর্শ এবং চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
নবজাতকের আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে খিচুনি হওয়া এক্ষেত্রে দেখা যায় তো আছে কিন্তু তা খিচুনি হচ্ছে এক্ষেত্রে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে খিচুনি সমস্যা দূর করব চেষ্টা করবেন আর তা না হলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে খিচুনি দূর করার চিকিৎসা গ্রহণ করুন এবং নবজাতকের আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে।
বাচ্চাদের ভীষণ জ্বর বা অতিরিক্ত জ্বর হওয়া একটা বাচ্চার জন্ম নেওয়ার দিন থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত একটি শিশু নবজাতক একটি বাচ্চার অতিরিক্ত জল হলে হাইপোথারমিয়া হয়ে থাকে এই হাইপোথারমিয়া একটি বাচ্চার জন্য খুব খারাপ।তাই বাচ্চার শরীর ঠান্ডা বা অতিরিক্ত জ্বর দেখা দিলে ডাক্তারের চিকিৎসা বা পরামর্শ গ্রহণ করুন।
গর্ভকালীন সময় বিপদ চিহ্ন
কোনটি গর্ব অবস্থায় বিপদ চিহ্নগুলো হল অধিক মাত্রায় বমি হওয়ার রক্তস্রাব উচ্চ রক্তচাপ তীব্র মাথাব্যথা ও চোখে ঝাপসা দেখা পেটে ব্যথা পেটে রাখার স্বাভাবিক চেয়ে বড় বা ছোট হলে দীর্ঘ সময় ধরে লেবার ব্যথা অনুভব করলে এবং বাচ্চা নড়াচড়া কম অনুভব করলে বিলম্বিত প্রসব ভীষণ জ্বর গর্ভ অবস্থায় যোনিপথে রক্তপাত হওয়া এবং অনান্য লক্ষণগুলো হলো জ্ঞান হারানো বা মাথা ঘোরা শরীরের মুখমন্ডল হাত পা ফুলে যাওয়া শরীরে পানি আসা শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া বুকে ব্যথা কিংবা বুক ধড়পড় করা অতিরিক্ত ক্লান্তি যোনিপথ থেকে ভারি রক্তপাত হওয়া ডিপ্রেশন স্বনের বোঁটায় লালা হয়ে যাওয়া
গর্ভকালীন সেবা
গর্ভকালীন সময়ে একজন মাকে যে স্বাস্থ্য সেবাগুলো প্রদান করা হয় তাকে গর্ভকালীন সেবা হিসেবে গণ্য করা হয় গর্ভ ধারণের সময় থেকে শুরু করে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত যে সময়কালে মা ও শিশুকে যত্ন সেবা দেওয়া হয় তাকে antinatal care বলে।গর্ভকালীন স্বাস্থ্যসেবার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মা ও শিশুর সশস্ত্র নেতৃত্বে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত
এবং গর্ভ সময়ে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিলে তা প্রতিরোধ বা তার চিকিৎসা করা। গর্ভকালীন স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীতা অপরীসিম । এই সেবা গুলোর কাজ সময় মত টিকা দেওয়া গর্ভবতী নারীকে সুষম খাবার নিশ্চিত করা এবং গর্ভাবস্থায় কোন ঝুঁকি সমস্যা দেখা দিলে তা নির্ণয় করার পরামর্শ দেওয়া ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য সেবা কর্মী সঠিকভাবে চেক করে গর্ভধারণ হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা সন্তানের বয়স নির্ণয় করা এবং সন্তানের প্রসব সম্ভাব্য তারিখ বলে দিতে পারবেন ডাক্তার এবং এই সময় কোন সমস্যা থাকলে তা নির্ণয় করা
গর্ভকালীন সময়ে করনীয়
- নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে
- সুষম খাবার গ্রহণ করুন
- খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত রাখুন
- পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম গ্রহণ করুন বিশ্রাম নিন
- পূর্বের স্বাস্থ্য সমস্যা বা রোগ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণের রাগ করতে হবে
- উচ্চ রক্তচাপ হৃদ রোগ ডায়াবেটিস
- যোনিবাহিত রোগ ইত্যাদি থাকলে তা নির্মূল করতে বা নিয়ন্ত্রন রাখতে হবে
- প্রসবকালীন খরচের জন্য টাকা সঞ্চয় করুন এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা আগে থেকে করে রাখুন
গর্ভকালীন সময়ে বিপদ লক্ষণ গুলো কি
গর্ভকালীন সময়ে মহিলাদের অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা সম্মুখীন হতে হয় নিচে পাঁচটি বিপদ চিহ্ন উল্লেখ করা হলো যেগুলো দেখা দিলে অতিসত্বর কাছের কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা মেডিকেলের শরণাপন্ন হতে হবে
- খিঁচুনি
- রক্তস্রাব
- বিলম্বিত প্রসব
- ভীষণ জ্বর
- মাথা ব্যাথা ও ঝাপসা দেখা
- খিঁচুনি গর্ভাবস্থায় প্রসবের সময় বা প্রসবের পরে খিচুনি হলে বা খিচুনি অনুভূতি হলে অতিসত্বর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের শরণাপন্ন হতে হবে এতে মহিলার ক্ষতি হতে পারে রক্তস্রাব গর্ভাবস্থায়
- রক্ত স্রাব প্রসবের সময় বা প্রসবের পর খুব বেশি রক্ত স্রাব বা গর্ভফুল না পড়লে অতিসত্বর ডাক্তার বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় হয়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে
- বিলম্বিত প্রসব প্রসবের সময় বাচ্চার মাত্রা ছাড়া অন্য কোন অঙ্গ-প্রথমে বের হওয়ার বা প্রসব ব্যাথা 12 ঘণ্টার বেশি থাকা এটি রোগের জন্য বিপদ সংকেত তাই এই লক্ষণ দেখা দিলে অতিসত্বর ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে
- ভীষণ জ্বর গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর তিন দিনের বেশি জ্বর বা দুর্গন্ধ যুক্ত স্রাব হলে এটি বিপদ চিহ্ন মনে করতে হবে এবং কাছের কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা মেডিকেলের গিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে
- মাথা ব্যাথা ও ঝাপসা দেখা। খুব বেশি মাথাব্যথা চোখে ঝাপসা দেখায় ইত্যাদি এগুলো গর্ভাবস্থায় বিপদের চিহ্ন বহন করে এগুলো দেখা দিলে অতি দ্রুত মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে
গর্ভকালীন সময়ে পেটে ব্যথা
গর্ব অবস্থায় পেট ব্যথা এবং পেট কামড়ানো একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও কখনও এটি মারাত্মক ক্ষতিকর রূপ নিতে পারে যার জন্য পেটব্যথা বা পেট কামড়ানো বেশ পরিচিতি সমস্যা হলে বলে এটি দুশ্চিন্তার কারণ নয় এই বলে অনেকে অবহেলা করেন কিন্তু এটি করা উচিত নয় পেট ব্যথা এবং পেট কামড়ানো দুটি গুরুতর সমস্যার লক্ষণ বহন করে এই সমস্ত গুলো দেখা দিলে
অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ বা চিকিৎসা গ্রহণ করুন পেটে ভোঁতা ধরনের ব্যথা অনুভূতি হতে পারে আবার কখনো কখনো তীব্র ব্যথা অনুভব হতে পারে পেট ব্যথা হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম গ্রহণ করুন অনেক সময় গর্ভধারণের ফলে শরীরে হরমোন জনিত নানান পরিবর্তন ঘটে এছাড়াও গর্ভে বড় হতে শিশুর জায়গা করে দিতে আপনার পেটের অংশে বিভিন্ন পরিবর্তন আসতে পারে এসবের কারণে মাঝে মাঝে পেটে ব্যথা অনুভব হয় এছাড়া পেটে বিভিন্ন কারণে ব্যথা অনুভূতি হতে পারে
- যেমন লিগামেন্টের ব্যথা
- গ্যাস পেট ফাঁপা ও
- কোষ্ঠকাঠির জন্য ব্যথা অনুভূতি হতে পারে
- অর্গাজম বা যৌন উত্তেজনা সময় ব্যথা হতে পারে
গর্ভ অবস্থায় রসের হাড় গুলো বৃদ্ধি পাক বৃদ্ধি পায় যার ফলে পেটে ব্যথা বা ভ্রুন যত বৃদ্ধি পেতে থাকে তত ইউটেরাস এর অভ্যন্তরীণ পর্দার চাপ বেশি পায় বা সৃষ্টি হয় দ্বিতীয় ত্রেমাসিকের সময় পেটের দুই পাশে ব্যথা অনুভূতি হয় আপনার যদি বাম দিকের কিছুটা ব্যথা হয় তাহলে বুঝতে পেরেছেন ডান দিকের কোন পরিবর্তন ঘটেছে
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি সমস্ত আলোচনা পড়ে আপনার কাঙ্খিত উত্তর পেয়েছেন। যদি আপনার উত্তর পেয়েছেন এবং আপনি জানতে পেরেছেন গর্ভকালীন সময়ের বিপদ চিহ্ন এবং গর্ভকালীন সেবা এগুলো জেনে আপনি একজন স্বাস্থ্য সচেতন এবং গর্ভকালীন সময়ে আপনার বাচ্চার সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করবেন আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের ব্লককে ফলো এবং শেয়ার দিয়ে পাশে থাকবেন এবং আপনার বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন সবাইকে পড়ার আমন্ত্রণ জানাবেন এবং কোন ভুল ত্রুটি থাকলে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url